সর্বশেষ

আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে গেছে হারিকেন বাতি

 


এই প্রজন্ম  হয়তো চিনতেই পারবে না হারিকেন  বাতি কি? তারা জানবে না  হারিকেনের আলোতে কেমন করে তাদের পূর্বপুরুষরা  বসবাস করেছিল।


 হারিকেন বাতি একটি কাঁচের বৃত্তের মাঝে থাকে। এটি  লোহার তৈরি হাতে ধরে নিয়ে যাওয়ার জন্য বাহিরের অংশে একটি ধরুনি থাকে।


 কাঁচের বৃত্তের মাঝে একটি কাপড়ের শলাকা সেটা আলো বাড়ানো ও কামনোর জন্য একটি চাকতি বা চাবি থাকে।  হারিকেনের বাতি কেরোসিন তৈলে জ্বলে।


আজ থেকে প্রায় ১৫-২০ বছর পূর্বেও হারিকেন বাতির ব্যবহার  গ্রাম বাংলার বিদ্যুৎবিহীন গ্রামে ছিল। বিদুৎবিহীন গ্রামের প্রতিটি বাড়িতেই ছিল হারিকেন বাতি। ছোট ছেলে মেয়েরা পড়াশোনা করেছে হারিকেনের আলোতে। গ্রাম বাংলার হাট-বাজারে দোকানদাররা হারিকেনের আলোতে বেঁচাকেনা করতেন। 


হারিকেন বাতির কথা জিজ্ঞাস  করতেই পাবনা সদর উপজেলার এক বাসিন্দা জোবায়দা খাতুন (৫০) বলেন, হারিকেনের আলোতেই আমাদের পড়াশোনা করতে হতো। সন্ধ্যা থেকে ঘুমানের পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত হারিকেনের আলোতেই সব প্রয়োজনীয় কাজ করতে হত। 


আমার মনে আছে হারিকেনর শলাকা ছোট বড় করার একটি চাবি ছিল।  শলাকা ছোট করলে আলো কম হত, আবার শলাকা বড় করলে আলো বেশি হত। অনেক সময় তৈল কম ফুরানোর জন্য ছোট করে রাখা হত। ছোট করতে করতে অনেক সময় হারিকেনের ভিতরে পরে যেত,  সেটা তোলা অনেক কষ্টের কাজ হাতে কেরোসিন তৈল লেগে যেত। 


হারিকেনে দিয়াশলাই দিয়ে আগুন দেওয়া হত।  একবার আগুন দিলেই নিজেদের ইচ্ছা মতো বন্ধ করা,  আলো কমানো বাড়ানো যেত। হারিকেনের আলো হালকা বাতাস হলে বন্ধ হত না এটাই ছিল তখন বড় সুবিধা। 


নতুন প্রজন্মকে হারিকেন বাতি সম্পর্কে জানতে  হলে পড়তে হবে ইতিহাস।  হারিকেন হয়তো জাদুঘরে রাখা হবে নতুন প্রজন্মের মানুষদের চিনানোর জন্য। 


গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য প্রতীকগুলোর মধ্যে হারিকেন অন্যতম। আধুনিক ছোঁয়ায় কালের বিবর্তনে বিলুপ্ত হতে যাচ্ছে বিদ্যুৎবিহীন গ্রামের সহজ সরল মানুষদের অন্ধকারদূর করার একমাত্র হাতিয়ার হারিকেন বাতি।  


সোহেল রানা, পাবনা সদর:  

Post a Comment

নবীনতর পূর্বতন